
গত ১২ ই জানুয়ারি রবিবার বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জে যমুনা লাইমসের ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া ২০ টন চুলা ভর্তি একটি ট্রাক করে সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমস। রহসজনক কারনে মাত্র ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ব্যাংকে ট্রেজারি জমা দিয়ে চুনা ভর্তি ট্রাকটি ছাড়িয়ে নেন মালিকপক্ষ।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ পুলের দিকে ঢাকা-মেট্রো- ট ১৬-৫২৭৫ ট্রাকটি রওনা দিলে ট্রাকটি আটক করা হয়। ট্রাকে চুনার চালান অনুযায়ী ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা মালামাল সহ জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমসের এসির নির্দেশ অনুযায়ী ১২ লক্ষ টাকার ভ্যাট ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য যমুনা লাইমস কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। যমুনা লাইমস কর্তৃপক্ষ যদি উক্ত টাকা ব্যাংকে জমা না দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তিতাস কর্মকর্তা আলিমের যোগসাজশে জরিমানা সহ নামমাত্র ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ব্যাংক জমা দিয়ে চুনা গাড়ীটি নিয়ে যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চুনা কারখানার কয়েকজন ব্যক্তি জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমসের আলীমের মাধ্যমে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে এই ঝামেলা মিটিয়েছেন যমুনা লাইমস কর্তৃপক্ষ। কাস্টমস যমুনা লাইমস কর্তৃপক্ষকে মামলার ভয়-ভীতি দেখিয়ে এ টাকা আদায় করে। কাস্টমসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আলিম বিভিন্ন চুনা কারখানার মালিকদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে লক্ষ লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্য করছে। শুধু কাস্টমস কর্মকর্তা আলীমই নয় কাস্টমসের বেশিরভাগ কর্মকর্তা ঘুষ বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন। এসব কাস্টমস কর্মকর্তারা কখনো কাস্টমসের এসি আবার কখনো কমিশনারের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রের দাবি।
যমুনা লাইমসের ম্যানেজার শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের যমুনা লাইমসের ভ্যাট ফাঁকি দেওযার দায়ে জরিমানাসহ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ভ্যাট জমা হয়েছে। আপনাদের প্রতিষ্ঠান যমুনা লাইমস সবসময় ভ্যাট ফাঁকি দেন এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম আমতা আমতা করতে থাকেন।
এতে করে সরকার শুধু মাত্র চুনা কারখানাগুলোতেই প্রতিমাসে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জে ১৬ টি চুনা কারখানা রয়েছে। যমুনা লাইমসের মালিক খোরশেদ আলম। তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ চুনা ব্যবসা করে আসছে। এতদিন যে পরিমান ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে তাহলে তিনি সরকারের ১০০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। কাস্টমস সঠিক তদন্ত না করেই শুধু মাত্র অল্প কিছু টাকা রাজস্ব দিয়েই ছাড় পেয়েই গেলো যমুনা লাইমসের মালিক খোরশেদ আলম। এসব দুর্নীতিবাজ কাস্টমসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সচেতন মহলের দাবি, সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করে আইনের আওতায় আনলে দেশে অনেক দুর্নীতি কমবে।
উক্ত বিষয়ে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ কাস্টমসের বিভাগীয় সরকারী কর্মকর্তা কাজী ফারুক বলেন, চুনা কারখানা যমুনা লাইমস ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ভ্যাট ফাঁকির দায়ে ৫ গুন জরিমানা সহ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা সরকারের ভ্যাট আদায় করা হয়, ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়।